মুখোমুখি দাঁড়ানো

সমস্যা থেকে পালিয়ে বেড়ানো কেবল সমস্যাকে কঠিন করে তুলবে। সমস্যা সমাধানের প্রথম শর্তই হচ্ছে সমস্যাকে চিহ্নিত করে, সেটার মুখোমুখি দাঁড়ানো। 

পৃথিবীর আর সবকিছুই

প্রতিটা মানুষই জীবনে কখনও না কখনও একটা বিপজ্জনক সময় পার করে। এ সময় নিজের ভাবনা, নিজের অনুভূতি ছাড়া পৃথিবীর আর সবকিছুই ভুল মনে হয়। মনে হয় তার চিন্তায় বাঁধা দেয়া প্রতিটি মানুষই বোধহয় তার সবচেয়ে বড় শত্রু।

আপাতত সমাধান

মানিয়ে নেয়া আর মনে নেয়া কখনই এক নয়, সম্ভবত সম্পর্ক আর সময়ের সংকটে অন্য এক ভাল লাগা। যাহোক, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপাতত সমাধান কোনো সমাধান না। আপাতত সমাধান করা মানে সমস্যাকে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার সুযোগ দেয়া।

ঠিক ততটাই আনন্দ

অপেক্ষা আর উপেক্ষা জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ দুই যন্ত্রনা। এ দুই যন্ত্রনা পেতে যতটা কস্ট। ফিরিয়ে দিতেও ঠিক ততটাই আনন্দ। বেশিরভাগ সম্পর্কের ক্ষেত্রেই আঘাতটা যে করে সে কখনও বুঝতেই পারেনা যে সে কতটা তীব্র আঘাত করেছে। 

জোড়া লাগেনা

ভেঙে যাওয়া আয়না আর ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক কখনও আর আগের মতো জোড়া লাগেনা। কারণ, দৃশ্যমান দেয়াল ভাঙা যতোটা সহজ, সম্পর্কের মাঝে থাকা অদৃশ্যমান দেয়াল ভাঙা ততটাই কঠিন।

একই কথার জাবর

মুখে মুখে কেবল মনের শুদ্ধতার কথা বললেও, মনকে গুরুত্বপূর্ণ বললেও, আসলে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল শরীর। শারীরিক শুদ্ধতা। প্রিয় মানুষের মন কখনো-সখনো অন্যের হয়ে গেলে আমরা মেনে নিতে পারি। কিন্তু তার শরীর কোনো এক মুহুর্তের ভুলেও অন্যের হয়ে গেলে, সেটি আমরা মেনে নিতে পারিনা, মেনে নেয়ার কথা ভাবতেও পারিনা। অথচ সবসময় সেই একই কথার জাবর কাটতে থাকি-

ভালবাসায় শরীর নয়, মনই আসল। 

আরও অনেকেই করছে

মানুষ যখন কোনো অপরাধ করে, তখন সে নানাভাবে নিজেকে নিজে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, সে যা করছে তা অপরাধ নয়। বা হলেও স্বল্পমাত্রার অপরাধ। এমন অপরাধ আরও অনেকেই করছে। কিংবা সে নিজেই নিজের কাছে নানাবিধ যুক্তি দিয়ে অপরাধটাকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করে।

সরাসরি উপেক্ষা করা যায় না

অনেকক্ষন কান্না করার পর মন খুব হালকা হয়ে যায়। অার তার প্রভাব পরে শরীরেও। একরকম স্নিগ্ধ একটা ভাব ফুটে উঠে চোখে মুখে। কিছু পরিস্থিতিকে যেমন সরাসরি উপেক্ষা করা যায় না, তেমনি কিছু মানুষকে সরাসরি অমান্যও করা যায়, এমনকি অপছন্দ করলেও না। উপেক্ষিত বা অমান্য করা যায় না এমন ব্যক্তিত্ব ধরে রাখতে হয়, প্রয়োজনে কিছুটা কান্না নাহয় মেনে নিলাম।

সামনের সবকিছুই যখন অচেনা

আমরা যাই ভাবি না কেন তা সম্পূর্ণ সত্য নয়, আমরা যা আশা করি তার সবটাই অলীক নয়, আমরা যা অলীক ভাবি তাও পুরোপুরি অবাস্তব নয়। সামনের সবকিছুই যখন অচেনা অজানা থাকে, তখন যেখানেই যাবো সেটাই গন্তব্য।

একটা শূন্যস্থান থাকতেই হবে

যদি অামাকে টুকিয়ে টাকিয়ে জড়ো করে ছেড়াফাঁটা জীবনের সুতোগুলি জোড়াতালি দিয়ে অাবার চালাতে হয়, তাহলে তুমি যেখানে থাকতে সেখানে একটা শূন্যস্থান থাকতেই হবে। অামার মধ্যে তুমি যতক্ষণ বেঁচে থাকবে, ততক্ষণ অামার পক্ষে কিছুতেই বেঁচে উঠা সম্ভব নয়।

বিকারগ্রস্ত মনে - মনে হতে পারে

ভালবাসা অার মালিকানা স্বত্ব এক জিনিস না। কারো ব্যক্তিত্ব ও মালিকানা স্বত্ববোধের শক্তি যদি স্বত্বভুক্ত সম্পত্তির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে যায়, তখন সেটা অনেক বেশি ভয়ংকর ও বিস্ফোরক হয়ে উঠে। কোনো কারনে স্বত্বভুক্ত সম্পত্তি খোয়া যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে অনেক সময় বিকারগ্রস্ত মনে- মনে হতে পারে ঐ সম্পত্তির বিলুপ্তি ঘটিয়ে তার জায়গায় একটা শূন্যস্থান বাঁচিয়ে রাখাই বরং নিজের অহম বা অাত্মবোধ কিংবা ব্যক্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখার একমাত্র উপায়।

ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের যোগফল

মানুষ কখনই একরকম হয় না। এক মুহুর্তে কোনো কিছুর প্রতি অামরা তীব্র অনুরাগ অনুভব করি, অাবার পর মুহুর্তেই হয়তো সেটা থেকে পিছু ছাড়াতে ব্যতিব্যস্ত  হয়ে পড়ি। মূলতঃ অামরা মানুষেরা কিছু ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের যোগফল। সে বৈশিষ্ট্য গুলো অামাদের এমনভাবে নিয়ন্ত্রন করে, মাঝে মাঝে মনে হয় অামাদের নিজেদের হাতে সম্ভবত কিছুই নেই। 

তীব্র অাবেগ ছাপিয়ে

দীর্ঘদিন অাগে দুজন দুপথে হারিয়ে যাওয়া তারা হঠাৎ করে সেদিন শহরের কোনো এক মোড়ে একজন অারেকজনকে পাশ কাটালো। হারিয়ে ফেলা স্মৃতি ভেদ করে উঠে অাসতে চাইলো পুরনো কোনো ঘ্রাণ।

কিন্তু স্মৃতির সেই কাঁপন, অার সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে ফেলা তীব্র অাবেগ ছাপিয়ে তাদের মনে উঠে এলো দ্বিধা। কোনো কথা না বলেই দুজন দুজনকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। অার শেষে হারিয়ে গেলো, অাবারও। 

মন খারাপ হয়না অার

আর কখনোই মন খারাপ করবো না ভেবে আমি প্রতিটি সন্ধ্যে অনেক দূর পর্যন্ত হাঁটি। যে ধূলো এবং বাতাস আমি পার করে যাই এবং অজস্র মানুষের আশ্চর্য ইচ্ছুক মুখমন্ডল, এর সাথে বিমর্ষ পুরাতন বালকের মতো মেঘসুদ্ধু আকাশ, ডুবতে থাকা সূর্য -

এইসব কিছুই আমি মনে রাখব না বলে আমার মন খারাপ হয় না আর।

দেখে শুনে বুঝে

জীবনে কিছু পরিস্থিতির জবাবে চুপ থাকাই শ্রেয়। কারণ কথাগুলো ক্রিকেট বলের মতো। সব বলে চার ছয় মারার চেষ্টা করতে হয় না। কিছু বল দেখে শুনে বুঝে ছেড়ে দিতে হয়। তাতে স্কোরবোর্ডে কিছু রান কম হলেও মঙ্গল থাকে। জীবনের মাঠে টিকে থাকলে রান করা যাবে। 

কোনো না কোনো পিছুটান

জীবনে সবারই ছোট-বড় কিছু না কি পিছুটান থাকে। কিন্তু যখন তুমি জীবনের অনেক বড় কোনো পিছুটানকে ছেড়ে যেতে পারবে, তখন অার কোনো পিছুটানই তোমাকে অাটকে দিতে পারবে না। ছেড়ে যাওয়াতে তখন তুমি হয়ে ওঠবে অদ্বিতীয়। 

অন্তত একটিবার

যত ভয়ংকর ব্যস্ততাই থাকুক না কেনো, জীবনে কিছু মানুষ থাকবেই যারা দিনে অন্তত একটিবার তোমায় নিয়ে ভাবে। পরিবারের লোকজন, খুব কাছের বন্ধু কিংবা তুমি কোন না কোনোভাবে দাগ কেটে যেতে পেরেছে এমন মানুষেরা তোমায় জানাক কিংবা না জানাক, তুমি ঠিক তাদের স্বরণে থাকো। তবে সম্ভব হলে তুমি কিন্তু জানাতে ভুলো না। 

ডুবিয়ে দেয়া যায় না

কিছু কস্ট থাকে, তার সবকিছু সবসময় নস্ট বলে ডুবিয়ে দেয়া যায় না। কিন্তু কোনো কস্টই জীবনকে পুরোপুরি থামিয়ে দেয়ার মতো শক্তিশালী হয়না। জীবন সকল ধরনের কস্টের চেয়েও অনেক বড়, অনেক মূল্যবান।

বাড়ে বোঝার ক্ষমতা

বয়সের সাথে সাথে মানুষের জৈবিক চাহিদা বাড়ে কিংবা কমে। তার চেয়েও বড় কথা বাড়ে বোঝার ক্ষমতা। জৈবিক তাড়নাকে বোঝার, প্রেম-ভালবাসা বোঝার সক্ষমতাও বাড়ে।

ভোরের পাখি

ভোরের সাথে যার সম্পর্কের দূরত্ব যত বেশি, তার স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তত বেশি। রাতজাগা নিশাচর থেকে, ভোরের পাখি হওয়া শ্রেয়। 

কঠিন সময়ে হাল ছেড়ে নয়

এক মুহুর্তের অমিলকে পুঁজি করে সহস্র মুহুর্তের পরিচিত মিলগুলোকে অশ্রদ্ধা করতে যেওনা। জীবন খুব সহজ নয় তা যেমন সত্য, জীবনকে এক মুহুর্তে বিচার করতে যাওয়াটা যে বোকামী সেটাও তেমন সত্য। ভালবাসা অাগলে রাখতে হয়, কঠিন সময়ে হাল ছেড়ে নয়, বরং অারও শক্ত করে ধরে রেখে অাগলে রাখতে হয়। 

পরিবর্তন অানতে চাইলে

জীবনে যে কোনো পরিবর্তন অানতে চাইলে শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর কেউই শুরু থেকে অনেক বেশি সেরা থাকেনা কিংবা সবসময় খুব সেরা থাকেনা। যতটা সম্ভব সেরা হওয়ার চেষ্টা করো কিন্তু নিজেকে এমনভাবে তৈরি করো, যেন পিছিয়ে গেলেও অাবার শুরু করতে পারো।

টিকে থাকা এক ধরনের খেলার মতো

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে টিকে থাকা এক ধরনের খেলার মতো। জয় পরাজয় মিলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। তোমাকে শুধু বুঝতে হবে এ খেলার কোন ক্ষেত্রে কি ধরনের মনোভাব রাখবে।প্রতিযোগিতা নাকি সহযোগিতা? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সহযোগিতার মনোভাব সহজ ও ফলপ্রসু।

অতীতে সত্য ছিল বলেই

পৃথিবীকে সবসময় যেভাবে দেখে এসছো, সেটাই দেখার একমাত্র পথ নয়। কোনো কিছু কেবল অতীতে সত্য ছিল বলেই যে অাজও সত্য হতে হবে তেমনটাও নয়। অার যেকোন কিছু সম্পর্কে তুমি যেভাবে বা যেটুকু শিখেছো সেটাই সবচেয়ে সেরা এমনটাও নয়। জানার ক্ষেত্রে, শেখার ক্ষেত্রে, বুঝার ক্ষেত্রে মনে রেখো, চারপাশে এসবের অনেক ধরন থাকতেই পারে। 

শরীর পুরনো হতে থাকে

যারা সময়ের ব্যাপারে সতর্ক, তাদের জন্য সময়ের ব্যবহার সহজ। অার যারা সময়ের ব্যাপারে অসতর্ক, তাদের জন্য সময়ের অপচয় সহজ। সময়ের সাথে সাথে জীবনে অনেক রকম পরিবর্তন অাসে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন অাসে শরীরে। শরীরে ধীরতা অাসতে থাকে ও শরীর পুরনো হতে থাকে। সময়ের অপচয়ে শরীরের ঝুঁকিটা ভাবো একটু, এবার? সিদ্ধান্ত তোমার। 

স্বাধীন ইচ্ছেরাও পরাধীন হতে

প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করেনা। স্বাধীন ইচ্ছেরাও পরাধীন হতে অাশ্রয় খোঁজে। অার পরাধীন ইচ্ছেরা? শূণ্যানুভূতির অভ্যাস হয়ে থেকে যায় মাত্র। বেঁচে থাকা মানেই বোধহয় বারবার গোছানোর চেষ্টা করে যাওয়া।

এই মুহুর্তে দূরন্ত

সহজ হওয়ার অাগে সব কিছুকেই কঠিন মনে হয়। অস্বাভাবিক মনে হওয়া প্রায় সবকিছুই এক সময় স্বাভাবিক হয়ে যায়। অার ইচ্ছেরাও অনেকটা এমনই। কখনও স্বাধীন, তো কখনও পরাধীন। এই মুহুর্তে দূরন্ত, তো পরমুহুর্তেই নিরাবেগ। সহজ কথা হলো, এই যে একটু অাগেই যে মুহুর্তটা চলে গেলো কিংবা এই যে একটু পর যে মুহুর্তটা অাসবে, এ দু'য়ের মাঝখানেই বেঁচে থাকা লুকানো। 

প্রতিনিয়ত তাড়া থাকা

কোন কিছুতে তাড়া না থাকা ব্যাপারটা এক রকমের সমস্যা। তুমি আছো, তোমার আশেপাশে সবকিছুই আছে; কিন্তু তুমি সেসবের কোনো অর্থ খুঁজে পাবেনা। জীবনে বেঁচে থাকার অর্থ অনেকটা নির্ভর করে কিছু না কিছুর দিকে প্রতিনিয়ত তাড়া থাকা। অথচ প্রায়ই এই তাড়াটুকু এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করো তুমি, তারপর দেখো, নিজের অর্থ হারিয়ে বসে আছো।

যতই আরাধ্য হোক

যেসব কিছু কখনও তোমার অস্তিত্বের অংশ ছিল, সেসব স্মৃতিকে ভুলে যেতে জোর করতে যাওয়া বোকামি। আর এ বোকামির বৃত্ত থেকে বের হতে না পারলে, নিজেকে খুঁজে নেয়া সম্ভব হবেনা। যা কিছু পেছনে ফেলে এসেছো বা যা কিছু তোমায় ফেলে গেছে, সেসব যতই আরাধ্য হোক, মুছে গেছে মেনে নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাও।

আমি তা জানতাম না

পথের মধ্যে অনেকেই ছিল, যাদের জিজ্ঞাসা করা যেত কিন্তু করি নি। আমি শুধু এগিয়েই গেছি, পায়ের পর পা ফেলে এগিয়েই গেছি শুধু। কেননা এগিয়ে যাওয়া যাওয়া ছাড়া আর কী করার থাকতে পারে আমি তা জানতাম না।

অনুভূতির অত্যাচার

কিছু কিছু অনুভূতির অত্যাচার অতিশয় ভয়ানক। এ অনুভূতিগুলো যখন কারও হৃদয়ে একবার আসন গেড়ে বসে, তখন মুখ বুজে এর অত্যাচার সহ্য করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকেনা।